সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের টিউশনি করানোটা একটা প্রথায় পরিণত হয়েছে। এই টিউশনি থেকে তারা একটা ভালো পরিমাণ টাকা উপার্জন করে থাকেন। যেটি একেবারেই নিয়মবিরুদ্ধ একটি কাজ। এই প্রথা বন্ধ করতে কড়া নির্দেশিকা জারি করা হল পূর্ব মেদিনীপুর প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষ থেকে। এরপর থেকে যদি সরকারি নির্দেশিকাকে অমান্য করে ফের টিউশনি করানো হয় তবে সরাসরি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে বলে এই নির্দেশিকার মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের বক্তব্য কী?
চলতি মাসের ১৮ জুলাই পূর্ব মেদিনীপুর প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান একটি নির্দেশিকা জারি করেন। সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যেসব প্রাথমিক শিক্ষক সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করে টিউশনি করবেন তাদের চাকরি বাতিল করা হবে।
এই সংক্রান্ত ব্যাপারে আসা অভিযোগগুলির মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই তদন্ত করে দেখতে হবে। এই মর্মে বিদ্যালয় পরিদর্শকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: Big News: এবার CBI স্ক্যানারে রাজ্যের ১ হাজার ৮২৯ জনের চাকরি! কোথায় কত জন? দেখে নিন
এই পদক্ষেপ কেন করা হল?
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক টিউশনির প্রথা দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তারা বেআইনিভাবে টিউশনি পড়িয়ে চলেছেন। বিভিন্ন কারণে সেই স্কুলেরই পড়ুয়ারা বাধ্য হচ্ছে তার কাছে টিউশনি পড়তে। এদিকে কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা আছে যে কোনো সরকারি স্কুল শিক্ষক টিউশনি করতে পারবেন না।
গৃহশিক্ষকরা এই পদক্ষেপে খুশি
পূর্ব মেদিনীপুর প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ এর এই পদক্ষেপ কে স্বাগত জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটি। তারাই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আর্জি জানিয়েছিলেন। এবিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে লোকসভা নির্বাচনের পরে এরকমই আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে।
আরও পড়ুন: সুখবর বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য! আবেদন করলেই টাকা পাবেন কেন্দ্র সরকারের এই প্রকল্পে
গৃহশিক্ষক কলয়াণ সমিতি জানিয়েচে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এই নির্দেশিকা যদি কার্যকর করা হয় তবে অনেক সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল হবে। এরসাথে তারা আরোও জানিয়েছে শুধু প্রাথমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রে নয় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
পূর্ণ সময়ের গৃহশিক্ষকদের কথায় সরকারি স্কুল শিক্ষকদের বেতন কাঠামো যথেষ্ঠ ভালো এবং স্কুল শিক্ষক হিসেবে পরিচিতি থাকায় স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে তাঁদের পরিচিতিটাও বেশি। এইজন্যই তাঁরা বেশি টিউশনি পেয়ে থাকেন। ফলে যাদের রুজি-রুটির জন্য টিউশনিটাই ভরসা তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: রিচার্জ-এর দাম বাড়লেও ২৮ দিনের সেরা প্ল্যান কারা দিচ্ছে? দেখে নিন
গৃহশিক্ষক কল্যান সমিতির তরফ থেকে বলা হয়েছে একটি জেলায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হলেই বাকি শিক্ষকদেরও টিউশনি করার প্রবণতা অনেকাংশে রোধ করা যাবে।
আগামীদিনে টিউশন পড়ানো স্কুল টিচারদের বাড়িতে বা কোচিং সেন্টারে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা করেছে গৃহশিক্ষক কল্যান সমিতি। দাবী না মিটলে প্রয়োজনে আরোও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন দেবে কেন্দ্র সরকার! কীভাবে আবেদন করবেন? রইলো বিস্তারিত